Saturday, 29 June 2019

Sagarika Nath Sharma

কবিতা
                                 সা রি কা   না   শর্মা


                             বিহীন

হঠাৎ দেখা তোমার-আমার
মোড়ের মাথার কোনে
বাবরি চুলে পাঞ্জাবি গায়
সিগারে ধুঁয়ো টেনে
হাঁটছো তুমি পায়চারি নয়
অন্যরকম ছুঁতো!
ডাকলে তুমি তৈরী গলায় ---
"একটা চা হলে ভালো হত"।
আমি তখন রিকশা ছাড়ি
সামলে নিয়ে ব্যাগের
পাশ পকেটে গুনছি ভাড়া
"সামলে যাওয়া চোটের
দর বড়জোর দু'চার বছর
কিংবা তারও বেশি,
হতেও পারে অতোটা নয়
শুনছো, এলোকেশী ?

বললে তুমি তীর-ইশারায়,
কুঁচকে নিয়ে ভ্রু
রিকশা ফেরাই অনাদরে
চাইনি ফিরে কেউ।

পেছন পেছন ছুটলে অফিস
তাড়াহুড়োয় কখন
ছিঁড়লে পকেট পাঞ্জাবিটার
বছর আগে যেমন
তোমার আমার ছিঁড়লো বাঁধন
ছিন্ন হল হৃদয়
রক্তপাতের উদ্গীরণে
ভিজলো বন্ধু, বিষয় ---
আগলে রাখার সামলে রাখার,
চোটের দর যে বেশি
চুপ করে সব বুঝলো দু'জন
বাবরি ও এলোকেশী!

অফিস গেটের নাছোড়বান্দা
বীর বাহাদুর খান
খিস্তি করে কিস্তি দিলো।
দাঁড়িয়ে থেকে সটান ---
দেখছিলো সব কান্ড তোমার
করছো ফলো আমায়
মোড়ের মাথার টি-স্টল থেকে
অফিস গেটের কোনায়।

আমার এখন খুব মনে হয়
বীর বাহাদুরও যেন
একলা হয়ে গেছে যেমন
আমরা এখন, জানো?
খুনসুটি সব নাম করা রোজ
হাইলাইটেড লাইনস
কোথায় যে সব হারিয়ে গেলো
বীর বাহাদুর ডিফাইনস!

অমনি তখন কলিগ তনয়
ডাকলো, অরুদ্ধ দা ---
ডাকছে তোমায় বিনোদ ঘোষাল
ফাইল খুঁজে পাচ্ছে না।
বলছে তোমায় খুঁজে দিতে
ডেস্কে রাখা আছে
বলছে ফাঁকি মারছো তুমি
শেষ জীবনে এসে!

হনহনিয়ে ঢুকে গেলাম
বাইরে বেজায় রোদ
একলা বোধয় আমিই নই
ঠাকুর ব্যাটাও খোদ!
---বিড়বিড়িয়ে যাচ্ছি বলে---
বিনোদ ঘোষাল খুব
বাড় বেড়েছে তোমার তাইনা?
জ্বালিয়ে খাচ্ছেন রোজ।

আবার ওদিকে ট্যাকনিকেল ফল্ট
ফ্যান নেই আজ দু'দিন
ঘেমে হচ্ছি নাস্তানাবুদ
বললো হেসে রথীন---
কি দিদিমণি আজ যে দেখছি
অরুদ্ধ দা নেই,
নয়তো এখন বাতাস পেতেন
ফ্যানটা চললেই

ঠিক তখনই ভাবতে বসলাম
এমন যদি হত
চশমা চোখো প্রেমিক আমার
আবার জড়িয়ে যেত!
জীবনমুখী হতাম আবার
আবার ছিঁড়ে দিতাম
বিভেদ থাকার ছাড়পত্রে
আগুন জ্বেলে দিতাম!

ফোনটা হঠাৎ উঠলো কেঁপে
--- মা আমি বেরুচ্ছি।
তোমার খাবার রাখা আছে
ডাল সেদ্ধ আর রুটি।
অন্যকিছু খেয়ো না প্লিজ
কোলেস্টেরল হাই
বাবার জন্যে আলাদা বক্স
খালি হওয়া চাই।

ঘামের ঘাড়ে লাগলো হওয়া
বন্ধ করে চোখ
শিউরে নিলাম খানিক সময়
হারিয়ে যাওয়ার হুজুগ ---
বুঝতে পেরে সেও কাছে
বসলো চেয়ার নিয়ে,
এলকেশী, শরীর ঠিকাছে?
বললো হাসি নিয়ে।


জবাব তাকে খাসা দিলাম
মিহি হেসেই গালে,
ভবিতব্য বিভেদ যাদের
তারা ভালো থাকে ছলে?
খানিক সময় থমকে থেকে
বললো জোরে হেসে,
প্রেমচর্যার ছাত্রিক গুন ---
'বিহীন' হওয়াই সাজে!




_______________________________________________________________________           

No comments:

Post a Comment